আল্লাহ তাআলা কোরআনে নবী-রাসুলদের বিপদগ্রস্ত হওয়ার এবং তা থেকে রক্ষা পাওয়ার ঘটনা বর্ণনা করেছেন, যেন পরবর্তী সময় মুমিনরা বিপদে আল্লাহর ওপর আস্থা রাখে। তাঁর সাহায্যের জন্য দোয়া প্রার্থনা করে এবং বিশ্বাসের সঙ্গে তাঁর জন্য অপেক্ষা করে। আল্লাহ যেমনটি অঙ্গীকার করেছেন। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ অচিরেই কাঠিন্যের পর সহজতা দান করবেন।’ (সুরা : আত-তালাক, আয়াত : ৭)
উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন কোনো মুমিন বিপদগ্রস্ত হয় আল্লাহ তার বিনিময়ে তার পাপ মোচন করেন, যদি না সে অভিযোগ-অনুযোগ করে বেড়ায়।’ (সহিহ বোখারি, হাদিস : ৫৬৪০)
আলোচ্য হাদিসে মুমিন বান্দাদের বিপদগ্রস্ত হলে ধৈর্যধারণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তার পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছে। কোনো মুমিন বিপদগ্রস্ত হওয়ার পর মানুষের কাছে অভিযোগ-অনুযোগ এবং ভাগ্যকে দোষারোপ না করে ধৈর্যধারণ করলে বিনিময়ে আল্লাহ তার পাপ মোচন করেন। এ ছাড়া ধৈর্যধারণের আরো অনেক পুরস্কারের ঘোষণা কোরআন ও হাদিসে এসেছে। নিম্নে কোরআনে বর্ণিত আটটি আসমানি পুরস্কারের বর্ণনা দেওয়া হলো :
১. আল্লাহকে কাছে পাওয়া যায় : ধৈর্যধারণকারীর সঙ্গে আল্লাহ থাকেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যধারণকারীদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ৫৩)
২. আল্লাহর ভালোবাসা লাভ : যারা বিপদে ধৈর্যধারণ করে, আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং আল্লাহ ধৈর্যধারণকারীকে ভালোবাসেন।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৪৬)
৩. ধৈর্যধারণকারীর জন্য অপেক্ষা করে সুসংবাদ : যেমন কোরআনে বলা হয়েছে, ‘এবং আপনি ধৈর্যধারণকারীদের সুসংবাদ দিন।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৫৫)
৪. ধৈর্যশীলদের জন্য উত্তম প্রতিদান : আল্লাহ ধৈর্যের পুরস্কার ঘোষণা করে বলেছেন, ‘এবং যারা ধৈর্যধারণ করবে আমি অবশ্যই তাদেরকে তারা যে কাজ করে তার চেয়ে উত্তম প্রতিদান দেব।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৯৬)
৫. ধৈর্যশীলদের আল্লাহ সাহায্য করেন : পবিত্র কোরআনে ধৈর্যশীলদের প্রতি আল্লাহর সাহায্যের ঘোষণা দিয়ে বলা হয়েছে, ‘হ্যাঁ, যদি তোমরা ধৈর্য ধরো এবং আল্লাহকে ভয় করো, তবে তারা দ্রুতগতিতে তোমাদের ওপর আক্রমণ করলে তোমাদের প্রতিপালক পাঁচ হাজার চিহ্নিত ফেরেশতা দ্বারা তোমাদের সাহায্য করবেন।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১২৫)
৬. ধৈর্যশীলদের প্রতি ফেরেশতাদের সালাম : ধৈর্যশীল বান্দা যখন জান্নাতে প্রবেশ করবে, জান্নাতের ফেরেশতারা তাদের প্রতি সালাম পাঠ করবে। আল্লাহ বলেন, ‘এবং ফেরেশতারা প্রত্যেক দরজা দিয়ে তাদের কাছে উপস্থিত হবে এবং বলবে তোমরা ধৈর্যধারণ করেছ বলে তোমাদের প্রতি শান্তি; কতই না ভালো পরিণাম (তোমাদের)।’ (সুরা : ইনসান, আয়াত : ১২)
৭. আল্লাহ তাদের রক্ষক হয়ে যান : আল্লাহ নিজেই ধৈর্যশীলদের রক্ষা করেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা ধৈর্য ধরো এবং আল্লাহকে ভয় করো তবে তাদের কোনো কৌশল তোমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১২০)
৮. নেতৃত্ব লাভ : শায়খ ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘ধৈর্য ও দৃঢ় বিশ্বাসের মাধ্যমে ধর্মীয় নেতৃত্ব অর্জিত হয়। অতঃপর তিনি এ আয়াত তেলাওয়াত করেন, ‘আর আমি তাদের মধ্য হতে নেতা মনোনীত করেছিলাম, যারা আমার নির্দেশ অনুসারে পথ প্রদর্শন করত, যেহেতু তারা ধৈর্যধারণ করেছিল। আর তারা ছিল আমার নিদর্শনাবলিতে দৃঢ় বিশ্বাসী।’ (মাদারিজুস সালিকিন : ২/১৫৪; সুরা : সিজদা, আয়াত : ২৪)
Nisha Moni
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?
Angel Mondal
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?
Ripon Raihan
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?